রাগী বউ পর্ব :১
- এই উঠো (ধাক্কা দিয়ে)
- কি হলো উঠো বলছি( আবারও গায়ে ধাক্কা দিয়ে)
- কি হয়েছে এই শীতের সকালে ওমন করে ডাকছো কেনো। ( চোখ বন্ধ রেখেই কথাটা বলে অন্যদিকে ঘুরে কম্বলটা টান দিলাম৷)
- কি হলো অন্য দিকে ঘুরে শুলে কেনো উঠো৷ (বলেই কম্বলটা টান দিলো)
- কি হয়েছে শীতের সকালে এমন নির্যাতন শুরু করলে কেনো (চোখ বন্ধ রেখেই)
- করবোই উঠো বলছি।
- হুম আর দুই মিনিট।
- না তুমি কি উঠবা না আমি পানি নিয়ে আসবো( একটু রেগে)
- হুম উঠছি তো বলো কি হয়েছে৷ ( চোখটা খুলে দেখি মহারানী আমার পাশে বসে আছে৷ দেখে তো রাগীই মনে হচ্ছে৷ কেনো যে মেয়েটা অল্পতে রেগে যাই৷)
- কি হয়েছে মানে উঠে বসো৷
- উঠছি তো বলো।
- যাও ওযু করে নামাজ পড়ে আসো।
- এই শীতের মধ্য উঠতে মন চায় বলো৷ তার উপর পানিও ঠান্ডা আজকে না গেলে হয়না৷
- না হয় না সামান্য ঠান্ডা পানিতে ভয় পাচ্ছো মৃত্যুর পরে যখন তোমায় এর থেকে ঠান্ডা পানিতে.....
- হয়েছে বুজতে পেরেছি যাচ্ছি তোমাকে আর বলতে হবে না৷
- হুম যাও
- দুই মিনিট পরে যাই আযান তো এখনো দেয়নি ( বলে কম্বলটা গায়ে পেচিয়ে নিলাম)
- না তুমি ওযু করে মসজিদে যাও যাওয়ার পথেই আযান দিয়ে দিবে আযানের আর বেশি সময় বাকি নেই৷
- হুম যাচ্ছি৷
ওযু করার জন্য পানিতে টাস করতে কেমন যেনো শট করলো প্রচুর ঠান্ডা৷ ওযু সেরে রুমে এসে দেখি বউ আমার হাতে তোয়ালে নিয়ে দাড়িয়ে আছে।
- এই নাও হাত মুখ মুছে নাও (তোয়ালেটা এগিয়ে দিয়ে)
- হুম৷
প্রচুর ঠান্ডা পড়ছে ইদানিং। হাত মুখ মুছে তাড়াতাড়ি শীতের বস্ত্র পরিধান করে নিলাম৷ মাথায় একটা টুপি নিয়ে বের হয়ে যেতে লাগলাম৷
- তুমি কিছু একটা ভুলছো (পিছন থেকে বলে উঠলো)
পিছনে তাকিয়ে দেখি সে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে৷
- উফ শীতে সবকিছু কেমন জানি ভুলে যাচ্ছি৷
কাছে এগিয়ে এসে জড়িয়ে ধরে কপালে আলতো করে একটা চুম্বন একে দিলাম৷ সে বাসর রাতের প্রথম দিনেই বলেছিলো প্রতিবার নামায পড়তে যাওয়ার আগে নাকি বউকে জড়িয়ে ধরে চুমু খাওয়া সুন্নাত।
- হুম এবার হয়েছে যাও নামাজ পড়ে আসো সাথে চাদরটা নিয়ে যাও বাইরে ভালোই ঠান্ডা পড়ছে৷
- হুম
বাড়িতে থেকে বের হয়ে গেলাম৷ আমাদের বাড়ি থেকে মসজিদটা দূরে হওয়ায় আমাকে আযানের আগেই বের হতে বলেছে৷ চারপাশটায় কুয়াশা ঠেকে রয়েছে৷ আশে পাশে তেমন কিছু পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে না৷ মাঝ পথ প্রায় পাড় হয়ে এসেছি৷ মোয়াজ্জেম তার সেই সুন্দর কন্ঠে আযান দিচ্ছেন যা প্রায় আশেপাশে অনেকটা দূর পর্যন্ত শোনা যায়৷ অনেক মানুষ আছে যারা আযানের প্রতিধ্বনিতে ঘুম থেকে জেগে উঠেন৷ মসজিদে এসে দেখি অনেকেই আমার আগেই চলে এসেছেন৷
নামায শেষ করে চাদরটা শরীরে পেচিয়ে বাড়ির দিকে হাটা দিলাম৷ আজকে কুয়াশাটা কেমন যেনো অন্যান্য দিনের থেকে বেশি৷ বেলা বাড়ার সাথে কুয়াশাও ঘিরে ধরছে৷ কেমন যেনো আজ নিজেকে কবি বা প্রেমিক মনে হচ্ছে৷ কুয়াশায় ভিজে থাকা ঘাসের উপর বিন্দু বিন্দু পানির ফোটা গুলো দেখতে অপরুপ লাগছে৷ ভাবতেই অবাক লাগছে কিভাবে এতোটা বদলে গিয়েছি৷ এক সময়ের আওয়ারা ঘুরে বেড়ানো ছেলেটা যার কিনা গ্যাঞ্জাম না করলে দিনটাই ফাকা ফাকা লাগতো অথচ আজ কতটা পরিবর্তন৷ সবই হয়েছে আমার তার জন্য। পায়ের থেকে স্যান্ডেল খুলে ঘাসের উপর পড়ে থাকা কুয়াশার বিন্দুর উপর দিয়ে হাটছি আর অতীতকে ভাবছি কেমন ছিলাম..সে কিভাবেই আসলো আমার জীবনে যার জন্য এতোটা পরিবর্তন।
...
।।।
Comments
Post a Comment