রাগী বউ পর্ব: ২
ভার্সিটির গেটের সামনে দাড়িয়ে আছি৷ নতুন অনেক ছাত্র ছাত্রী এসেছে সবাই মিলে তাদের কেই দেখছি৷ আমরা যেহেতু ৩য় বর্ষের ছাত্র সাথে কিছুটা আওয়ারা টাইপের কিছুটা রেগিং না করলে কি চলে৷
- ওই আশিক এই দিকে আয়৷ (আমার বন্ধু)
- কি হয়েছে।
- আজকে তো অনেক মেয়ে ছেলে আসছে রেগিং করবিনা৷
- নারে আমি ভদ্র হয়ে গেছি।
- তুই যদি ভদ্র হস তো দুনিয়াই আর কোনো খারাপ মানুষই নাই।
- তুই আমাকে এতো বড় অপমান করলি।
- অপমান কই করলাম আমি তো সম্মান দিছি৷
- শোন নতুন ছেলেমেয়েরা আসছে কয়েকটাদিন যেতে দে তার পর না হয় ভেবে দেখবো। সোহাহকে ফোন দে দেখ কোথায় আছে৷
- ফোনটা বের করে দেখতে যাবো তার আগে সোহাগ নিজেই আমাকে ফোন দিছে৷
- হ্যালো সোহাগ
- সিয়াম কই তুই
- ভার্সিটিতে তুই কই
- আমি ভার্সিটির পিছনে যে বাগানটা আছে ওই খানে আছি রাফিকে ৪র্থ বর্ষের ছেলেরা মারছে।
- কি বললি দাড়া আমি আসছি।
- কিরে কি হলো ( আশিক)
- রাফিকে নাকি বড়রা মারছে।
- ১ ক্লাস বড় বলেকি যাতা করবে নাকি চল দেখি কে মারছে।
দুজনে হাতে দুইটা বড়সড় জুত মতো লাঠি নিয়ে বাগানের দিকে গেলাম ৷ গিয়ে দেখি বড় ভাইরা রাফিকে মারছে আর সাথে সোহাগকেও আমি আর আশিক তো লাঠি নিয়ে দিছি দৌড়ানি ওরা তিনজন ছিলো যেহেতু আমাদের দুজনকে দিয়ে চারজন তাই চলে গেছে।
- কিরে রাফি তুই ঠিক আছিস৷ (আমি)
- হ্যা
- ওরা মারতে আসছিলো কেনো তোকে।
- জানি না মনে হয় সেদিন ওদের একজন যখন মেয়েদের সাথে টিজ করছিলো আর আমি তখন থাপ্পড় মারছিলাম সে জন্য৷
- আচ্ছা বাদ দে পরে দেখা যাবে চল৷
- হুম।
ভার্সিটি শেষ করে বাসায় এসে দেখি ছোট বোন রাইসা টেবিলে বসে খাবার খাচ্ছে। ও এবার নবম শ্রেণীর ছাত্রী।
- কিরে সারাদিন তো খেয়ে খেয়ে মোটা হয়ে যাচ্ছি।
- তাতে তোর কি হিংসা হয় নাকি আমাকে দেখে।
- আমার কেনো তোকে দেখে হিংসা হতে যাবে।
- এই যে তুই মশার মতো বডি না তো বটি নিয়ে চলাচল করিস আর আমার সাস্থ্য ভালো সে জন্য৷
- মশা আছি ভালো আছি যে খানে সেখানে উড়ে তো যেতে পারবো তোর মতো তো আর বাচ্চা হাতি না। তুইতো দেখতে পুরাই ছোট খাটো একটা বাচ্চা হাতির মতো।
- কি বললি আমি বাচ্চা হাতি ( চোখ গরম করে আমার দিকে তাকিয়ে)
- তা নয়তো কি৷
- তোর বোনকে বাচ্চা হাতি বলতে লজ্জা করে না।
- না করেনা আম্মু কোথায়৷
- বলবো না৷
- বলবি নাকি মাথায় গাট্টি মারবো৷
- আম্মু ঘরে নামাজ পড়তেছে৷
- ও আচ্ছা আমি উপরে গেলাম আম্মুর নামাজ পড়া হলে আমাকে ডাক দিস৷
- পারবো না
- কিরে সিয়াম তুই এসেছিস।( আম্মু)
- হুম নামাজ পড়া শেষ তোমার৷
- হ্যা তুই পড়েছিস
এই সেরেছে নামাজ তো পড়িনি ইদানিং কেনো যেনো নামাজকে হেয়ালি করছি৷
- মানে ওই প্যান্টটা নষ্ট তো তাই আারকি...(মাথা চুলকাতে চুলকাতে)
- নামাজের প্রতি এতো উদাসিন হয়ে গিয়েছিস কেনো জানিস নামাজ না পড়লে কত শাস্তি পেতে হবে মৃত্যুর পরে।
- আচ্ছা পরে পড় নিবো খুব ক্ষুদা লাগছে খেতে দাও।
- বস আমি আসছি৷
খাওয়া দাওয়া শেষ করে বাসা থেকে বের হয়ে গেলাম৷ অনেক দিন হলো সোহাগদের এলাকায় যাওয়া হয় না তাই সেখানে আসছি৷ আমরা চারজনেই চার রাস্তার গলির মাথায় দাড়িয়ে আড্ডা দিচ্ছি। পাশ দিয়েই একটা মেয়ে যাচ্ছিলো।
- কিরে সোহাগ তোদের এলাকায় মনে হচ্ছে নতুন আসছে৷
- হুম
- দেখতে তো মোটামুটি খারাপ না রিলেশন করছিস নাকি।
- আরে না মেয়েটা খুব ভাবের উপর চলে দেখছোস না সাথে একটা কুত্তা নিয়ে ঘুরতেছে৷
- আচ্ছা তাই নাকি নাম কি মেয়েটার৷
- পৌর্শী
- ওই পুষি ( জোড়ে করে পিছন থেকে ডাক দিয়ে আবার গল্পকরা শুরু করে দিলাম)
মেয়েটাকে আড় চোখে লক্ষ্য করে দেখলাম সেখানেই দাড়িয়ে পড়লো। মুখটা খেয়াল করে দেখলাম ঠোট যেনো দাত দিয়ে কামড়ে ছিড়ে ফেলছে৷
- বেশি কাপড়ালে রক্ত বের হয়ে যাবে ( অন্য দিকে ঘুরে বললাম)
মেয়েটা কাছে আসলো।
- ওই কি বললেন (মেয়েটা)
কথাটা শুনে তার দিকে তাকালাম৷
- জ্বী আমাকে বলছেন।
- কেনো আপনি কি বইড়া না কানা।
- ওই সাবধানে কথা বইলেন ( ঝাড়ি দিয়ে)
- আপনার ঝাড়িতে আমি ভয় পায়না ঠিক আছে দেখতে তো মশার মতো৷
- আবার হাত কেটে পায়ে ধরায় দিবো।
- পাগল মানুষ পাগলের মতো কথা সাহস আছে আপনার।
- সাহস আছে মানে দেখতে চান৷
- হ দেখি কি করতে পারেন।
এ মাইয়ার সাহস দেখি কম না৷ না থাক কিছু বলা যাবে না হতে পারে কোনো বড়লোকের মেয়ে।
- না থাক আমি মেয়েদের গায়ে হাত তুলিনা৷
- ভালো কথা আমাকে কি বললেন৷
- কখন কি বললেন৷
- পুষি বললেন কেনো
- আমি তো ওই কুত্তাটারে কইছি৷
- ওই ওরে কুত্তা বলবেন না ও কুত্তা না ঠিক আছে৷
মেয়ে বলে কি একবার মেয়েটার দিকে তাকালাম তো কুত্তার দিকে৷
- কানা নাকি আপনে আমি দেখছি কুত্তা আর আপনি বলেন কুত্তা না৷
- আবার বলছি না ওকে কুত্তা বলবেন না৷
- একটা কুত্তাকে কুত্তা বলবো না তো কি বলবো ওহ্ বুঝছি কুকুর৷
পাশ থেকে দেখলাম কুকুরটা ঘেউ ঘেউ করে উঠলো।
- ওই কুত্তা চুপ৷
- আবার ওর নাম লালু বুঝলেন আবার কুত্তা বললে কিন্তু আপনাকে কামড়িয়ে দিবে৷
- লালু হা হা হা তা এইটা কি আপনার খালু।
- কি বললেন ( চোখে মুখে রাগী ভাব)
- দাড়ান আপনাকে দেখাচ্ছি লালু যা ধর ( বলেই হাত থেকে কুত্তাটাকে ছেড়ে দিলো)
কুত্তাই তো ঘেউ ঘেউ করতে করতে পিছন থেকে দৌড়ানি দিছে আমিও কি কম নাকি উসাইন বোল্টের ভক্ত আমি আমিও দৌড়াচ্ছি৷
চলবে....
Comments
Post a Comment